Srijaner Podaboli (Bengali Podcast)

Srijan Kundu

Srijaner Podaboli / সৃজনের পডাবলী Namaskar, Ami Srijan Kundu Jiboner tukro tukro katha, byaktigato anubhuti , sab ek jaygay rakhar jonne ei podcast . /* The views and opinions expressed or implied herein are my own and does not reflect those of my employer, who shall not be liable for any action that may result as a consequences of my views / opinions */ read less
Society & CultureSociety & Culture

Episodes

Kuasha Jakhon
14-01-2024
Kuasha Jakhon
Kuasha Jakhan নতুন বছর শুরু হয়ে গেছে।  আমি দু তিন সপ্তা এপিসোড বানাইনি বলে সময় কি থেমে থাকবে ? থাকবে না।  তাই একটু দেরি করে হলেও আপনাকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা। বছরটা আপনার জন্য গোবিন্দ ভোগ চালে নলেন গুড় দিয়ে বানানো পায়েসের মতন বা পাটি সাপটা বা পুলি পিঠের মতন মিষ্টি হয়ে উঠুক। এই এপিসোডটা দু সপ্তা আগে করা উচিৎ ছিল, কিন্তু বেটার লেট দ্যান নেভার। ঘটনাটা সপ্তা দুয়েক আগের , কলকাতা থেকে দিল্লী ফিরছিলাম, সেই ঘটনা বহুল জার্নির কথাই বলব সৃজনের পডাবলীর এবারের এপিসোডে।  ক্রিসমাসের উইকএন্ডটাতে কলকাতা গেছিলাম। ফেরার ট্রেন ছিল রাজধানী। যে দিন ফিরব তার আগের দিন দেখি শেষ তিন চার দিন ধরে রাজধানী প্রায় ছ সাত ঘন্টা লেট করে ঢুকছে।  ট্রেন এরকম লেট করলে মুশকিল। ডিসিশন নিলাম, যে নাঃ ট্রেনে যাওয়া রিস্কি হয়ে যাবে। ট্রেনের টিকিট ক্যানসেল করে ইন্ডিগোর সন্ধে ছটার ফ্লাইটের টিকিট কাটলাম।  ইন্ডিগোর নাটক সবার জানাই আছে, হাতে অনেক সময় নিয়ে যেতে হয়।  মোটামুটি সাড়ে তিনটের দিকে যখন বেরোচ্ছি, SMS এলো যে ফ্লাইট চল্লিশ মিনিট দেরিতে ছাড়বে। ভাবলাম ভালোই হল, লাউঞ্জে যাওয়া যাবে। এমনিতেই লাউঞ্জএ গেলে ভোগের খিচুড়ির মতন লম্বা লাইন পড়ে ।  তবে কলকাতার লাউঞ্জটা ভালো, খাওয়া দাওয়া বেশ ভালোই পাওয়া যায়।  দিল্লীর টি টু তে যেমন একটা মাত্র ননভেজ অপশন থাকে, কলকাতায় সেরকম না , বেশ কিছু পাওয়া যায়। তার উপর বাড়ি ঢুকতে ঢুকতে দশটা বাজবে, পেটটা ভরা থাকলে ভালোই হবে।  ভাগ্গিস লাউঞ্জে দু টাকা দিয়ে পেট পুরে খেয়েছিলাম। কেন বলছি ? আসছি সে কথায়।  ছটার ফ্লাইট ছটা চল্লিশ করে দিয়েছে আগেই বলেছিলাম, গুগলে দেখাচ্ছিল যে ওই ফ্লাইটটা দিল্লী থেকে গয়া, গয়া থেকে কলকাতা আসছে। ছটা চল্লিশের কিছু আগে সেই ফ্লাইট কলকাতায় এল কিন্তু কলকাতা থেকে দিল্লী যাওয়ার ফ্লাইটের টাইম করে দিয়েছে রাত আটটা। কিছু লোক সেই দেখে ঝামেলা শুরু করে দিয়েছে, কারো পর দিন সকালে পরীক্ষা দিতে যাওয়া আছে, কারো কোথাও এডমিশন আছে, কারো বাচ্চা ছোট।  আমি দেখলাম, কিছু করার নেই কফি খেয়ে আসা যাক। সেই ভেবে কিছুটা সরে অন্যদিকে এসেছি, দেখি এয়ারলাইনসের লোক কয়েকজনকে নিয়ে অন্য কোথাও যাচ্ছে। তাদের কাছে গিয়ে বুঝলাম যাদের এমার্জেন্সি আছে, তাদেরকে সাতটা কুড়ির একটা দিল্লীর ফ্লাইট আছে, সেটার খালি সিটে এডজাস্ট করানোর চেষ্টা করছে। আমি ও চললাম তাদের সাথে। একটা ফাঁকা কাউন্টারে গিয়ে ওই সাতটা কুড়ির ফ্লাইটে ওনারা টিকিট করে দিলেন।  যে কজন যাত্রী এনার সাথে এসেছিলেন, সবারই ব্যবস্থা হয়ে গেল।  বাড়িতে জানিয়ে দিলাম, আটটা অব্দি অপেক্ষা করতে হবে না, তার আগেই বন্দোবস্ত হয়ে গেছে। ফ্লাইট মোটামুটি টাইমেই ছেড়ে দিল, লাভের লাভ যেটা হল - আগেরটা মাঝের সিট ছিল, এটা উইন্ডোসিট এবং বেশি লেগস্পেসের সিট, নরম্যালি কাটলে অনেকটা টাকা বেশি নিয়ে নিত। সাড়ে নটার দিকে পাইলট এনাউন্স করলেন - দিল্লির কাছাকাছি এসে গেছি। আর মোটামুটি আধ ঘন্টার মধ্যেই দিল্লী পৌঁছে যাব। পরের এনাউন্সমেন্ট দশটার দিকে, দিল্লীতে খুব কুয়াশা, রানওয়ে ব্যাস্ত, ল্যান্ডিং এর অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে না। এর কিছুক্ষন পরে জানানো হল - দিল্লীতে নামার পারমিশন পাওয়া যায় নি, ফ্লাইট ডাইভার্ট করা হয়েছে ইন্দোরে।   আমার জন্য এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা, ফ্লাইট ইন্দোরে নামল ওই পৌনে এগারোটা নাগাদ। ফ্লাইট থামার পর শুনছি আমার পিছনের রো তে বসা এক মহিলা তার আত্মীয়কে ফোন করে জিজ্ঞেস করছেন, ভালো হোটেল কি আছে। সেটা অবশ্য ওনার দরকার পড়েনি, কারন প্লেন থেকে কাউকে নামানো হয়নি । পাইলট ঘোষণা করলেন, দিল্লীর এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সাথে ওনারা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন, যত দ্রুত সম্ভব ফ্লাইট দিল্লী উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।  এরই মধ্যে কেউ একজন অনলাইনে দেখে বললেন, যে ফ্লাইট ডিলে হচ্ছে বলে আমরা কয়েকজন আগের ফ্লাইটে উঠে এলাম, সেটা এগারোটা নাগাদ দিল্লী ল্যান্ড করে গেছে। হইচই করে আগের ফ্লাইট না ধরলে এখন ইন্দোর নয়, দিল্লীতে থাকতাম।  এর পর ইন্ডিগোর তরফে রিফ্রেশমেন্ট এর ব্যবস্থা হল - একটা ওটস বিস্কুট , ড্ৰাই ফ্রুটস কিছু আর একটা ফ্রুট জুসের প্যাকেট। এখন মনে হল, ভাগ্গিস কলকাতা লাউঞ্জে পেট পুরে খেয়ে উঠেছিলাম, না হলে খিদেতে অবস্থা খারাপ হত।  এর পর একটা ইন্টারেস্টিং জিনিস হল - সেটা হল পাইলট পরিবর্তন। আমি যে উইন্ডো সিটে বসেছিলাম, তার পাশের সিট খালি ছিল আর আইল সিটে ছিলেন - অন্য এক এয়ারলাইন্সের একজন পাইলট, যিনি কলকাতায় কাজ সেরে দিল্লীতে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি বেশ কয়েকবার এয়ার হোস্টেসদের কথা বলছিলেন।  তাকে জিজ্ঞেস করলাম - কি হল কেস টা ? উনি জানালেন - ফ্লাইট ছাড়বে কিছুক্ষনের মধ্যে।  এই পাইলটের জিরো ভিজিবিলিটিতে ল্যান্ড করানোর এক্সপার্টাইস আছে। এবার নামতে অসুবিধা হবে না।  --- Send in a voice message: https://podcasters.spotify.com/pod/show/srijaner-podaboli/message
Chingrir Malaikari
21-12-2023
Chingrir Malaikari
দিনটা 3rd সেপ্টেম্বর, দু হাজার তেইশ। কলকাতায় সেদিন ডুরান্ড কাপের ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গল। কলকাতায় থাকলে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে থাকতাম। তার আগে গ্রূপ স্টেজের ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল আবার বহু বছর পর মোহনবাগানকে হারিয়েছে, তো এই ম্যাচ বদলা নেওয়ার ম্যাচ। খেলাধুলোর ব্যাপারে ডিটেলে ঢুকছি না। ম্যাচটা মোহনবাগান যেতে এবং ডুরান্ড কাপ ঘরে তোলে। দিল্লী আছি বলে কি সেলিব্রেশন হবে না ? তা হয় নাকি ? ভাবলাম চিংড়ির মালাইকারি লাগবে। সুইগি, জোম্যাটোতে পেলাম। কোই পরোয়া নেহি, নিজেই বানাবো ঠিক করলাম। দিল্লী আসার আগে কখনো মাছ রান্না করিনি।  দিল্লী আসার পরে অবশ্য রুই, বাসা এসব মাছ যা পাওয়া যায়, ইউটিউব দেখে টুকটাক রান্না করেছি কয়েকদিন। খুব আহামরি কিছু না হলেও, খাওয়া যায়।  সেই অভিজ্ঞতাই ভরসা দিল , সেদিনের মালাইকারি রান্নারই গল্প আমি সৃজন শোনাব আমার এই পডকাস্ট সৃজনের পডাবলীর এবারের এপিসোডে।    হাজার বছর ধ’রে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে, সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে অনেক ঘুরেছি আমি;  বনলতা সেন কবিতার সেই মালয় মানে আজকের মালেশিয়াই নাকি মালাইকারির উৎস। মালাই কারির মালাই নাকি নারকেলের দুধের মালাই না, আর মালাই কারি আসলে মালয়কারি।  তা উৎস যাই হোক, পৃথিবীশুদ্ধ লোক মালাইকারি বিশুদ্ধ বাঙালি খাবার বলেই জানে।  তো যা বলছিলাম, মোহনবাগান ট্রফি জিতল, সন্ধের দিকে , ভাবলাম সুইগি বা জোম্যাটোতে মালাইকারি অর্ডার করি।  ও হরি, নো মালাইকারি। কিন্তু একবার কিছু একটা করব ডিসাইড করলে সেটা তো করতেই হবে।  লিসিয়াসে চিংড়ি অর্ডার করলাম।  তারপর ইউটিউব খুলে দেখলাম কি করে বানানো যায়।  ফার্স্ট স্টেপেই ঝামেলা, নারকেল যদি কিনেও আনি, তার দুধ বার করার কোন সরঞ্জাম নেই আমার কাছে ইউটিউবে দেখলাম, ম্যাগির একটা নারকেল দুধের পাউডার পাওয়া যায়, সেটা নিয়ে এলাম। এই পডকাস্টের মহিলা অডিয়েন্স যেহেতু মাত্র কুড়ি পার্সেন্ট, তাই সাহস করে রেসিপি ও বলব এই এপিসোডে।  কে বলতে পারে, আমার মতন কোন বিদেশ বিভুঁইয়ে পড়ে থাকা কারো হয়ত কাজে লেগে গেল।  আমি ইউটিউবের রেসিপি দেখে যেভাবে করেছি সেটা বলছি, কি করে মনে আছে ? মনে নেই 😀, এই এপিসোড রেকর্ড করার আগে সেই ভিডিওটা আর একবার দেখে নোট করে নিলাম যাতে বলার সময় ভুল না করি।  প্রথমে ওই নারকেলের গুঁড়ো দুধ নিয়ে তাতে গরম জল দিয়ে দুধটা বানিয়ে নিতে হবে। এবার প্যানে তেল নিয়ে সেটা গরম করে তাতে চিংড়ি অল্প ভাজতে হবে, উল্টে পাল্টে।  আমি একটু বেশি ভেজেছিলাম বলে, চিংড়িটা শক্ত হয়ে গেছিল। এই তেলেই আর একটু তেল দিয়ে তাতে তেজপাতা, এলাচ, দারচিনি দিয়ে একটু ভেজে তাতে পেঁয়াজের পেস্ট, আদা রসুন পেস্ট ,টমেটো পেস্ট, হলুদ আর একটু গরম মশলা দিয়ে কয়েক মিনিট ধরে নেড়ে নিলাম যতখন পর্যন্ত্য না তেল ছাড়ছে। তারপর ওই নারকেলের দুধ যেটা বানানো হয়েছে সেটা দিতে হবে। ইউটিউবে পোস্ট বাটা দেওয়ার কথা বলা আছে, সেটা আমার কাছে ছিল না বলে ওটা বাদ। এবার যে ঝোলটা তৈরী হল, সেটাতে একটু চিনি, একটু নুন, আর একটা কি দুটো কাঁচা লঙ্কা দিতে হবে। মিনিট দুয়েক,, ঝোলটা হয়ে গেলে, সেটাতে চিংড়ি গুলো  দিয়ে লো হিটে মিনিট দশেক রান্না করলেই হয়ে যাবে। শুধু গ্যাস বন্ধ করার আগে এক চামচ ঘি আর একটু গরম মশলা দিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে। প্যারালালি ভাত ও রান্না হয়ে যাবে। বা ভাতটা মালাইকারি রান্না  শেষ করে তার পরেও করা যায়। খেতে কিন্তু বেশ ভালো হয়েছিল। তার পরেও তিনবার বানিয়েছি এখনো পর্যন্ত্য। বাড়ির মতন না হলেও, খুব একটা খারাপ খেতে হয়নি। rather বেশ ভালো হয়েছিল খেতে। পরের বার গুলোতে আমি আলু ও চার টুকরো করে কেটে, ভালো করে ভেজে মালাইকারিতে দিয়েছিলাম। ভালোই লেগেছিল।    এই এপিসোড আর টেনে বড় করব না। আজ আবার মোহনবাগান হেরে গেল মুম্বাইয়ের কাছে। মুম্বাই ধীরে ধীরে একটা খুব শক্ত গাঁট হয়ে উঠছে আমাদের কাছে। মনটা একটু খারাপ হয়ে আছে। দিল্লীতে ঠান্ডাটাও জম্পেশ পড়েছে। মাঝ রাতে রেকর্ড করাও একটা ঝামেলার কাজ।  যাই হোক, চেষ্টা করব বছর শেষ হওয়ার আগে আর একবার আপনার সাথে ছোট্ট করে আড্ডা দিয়ে যেতে।  জানি না, হবে কিনা।  ভালো থাকবেন। কথা হবে আবার। আজ চলি, টাটা।   --- Send in a voice message: https://podcasters.spotify.com/pod/show/srijaner-podaboli/message
Metro Rail .... Kolkata Metro and Delhi Metro
03-12-2023
Metro Rail .... Kolkata Metro and Delhi Metro
দিল্লী আসার পর প্রথম সপ্তাতেই অফিসের একটা ইভেন্টে যাওয়ার ব্যাপার ছিল। আরো কয়েকজন কলিগের সাথে ফিরছি মেট্রো রেলে - দিল্লীতে নতুন ভেবে মেট্রো আর মেট্রোর ভীড় নিয়ে জ্ঞান দিতে শুরু করলেন একজন। থামাতে বাধ্য হলাম, একটু মজা করেই বললাম  - অফিস ফেরতা চাঁদনী চক মেট্রোর ভীড় তো দেখোনি বাপু আর আমাদের কলকাতার মেট্রোর কাছে তোমাদের এই দিল্লীর মেট্রো সেদিনের বাচ্চা, নাক টিপলে দুধ বেরোবে। কিন্তু আজ প্রায় মাস সাতেক দিল্লিতে কাটিয়ে বুঝতে পারছি - দিল্লী মেট্রোর যা নেটওয়ার্ক, সেটার জাস্ট তুলনা হয়না।  অথচ, যেভাবে প্ল্যান করা হয়েছিল, সেগুলো করা হলে, কলকাতা মেট্রোর নেটওয়ার্ক আজ বহুদূর এগিয়ে থাকতে পারত।  ব্রিটিশরা উনিশশোউনিশে প্রথম কলকাতা মেট্রোর প্ল্যান করেছিল বাগমারী থেকে সালকিয়া, শুনে … চন্দ্রবিন্দুর গানের লাইন - কেউ ভালোবেসে যায় হাওড়া বা সালকে মনে পড়তেই পারে, কিন্তু তাতে আমার বিশেষ কিছু করার নেই। যাই হোক সেই প্ল্যান বাজেটের অভাবে আর execute হয়ে উঠল না। স্বাধীনতার পর বিধানচন্দ্র রায় আবার উদ্যোগ নিলেন আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোর কারন কলকাতার বা তৎকালীন ক্যালকাটার রাস্তার ভাগ সামান্যই। এরপর সত্তরের দশকের প্রথম ভাগে আবার উদ্যোগ নেওয়া হল মেট্রোর। সাহায্য নেওয়া হল সোভিয়েত ও পূর্ব জার্মানির ইঞ্জিনিয়ারদের। তারা পাঁচটা রুট সাজেস্ট করলেন, তারমধ্যে থেকে বেছে নেওয়া হল তিনটে রুট  দমদম থেকে টালিগঞ্জ  সল্টলেক থেকে রামরাজতলা  দক্ষিনেশ্বর থেকে ঠাকুরপুকুর  দমদম থেকে টালিগঞ্জ এই রাস্তায় ভীড় বেশি বলে ফার্স্ট ফেজে এই রুট বেছে নেওয়া হয়েছিল, তবে এখন এটাই দক্ষিনেশ্বর অব্দি চলে গেছে। ওদিকে জোকা থেকে তারাতলা মেট্রো এসপ্ল্যানেডে এসে মিশলে থার্ড রুট টাও হয়ে যাবে।  আর সেকেন্ড রুটের সল্টলেক থেকে রামরাজাতলা শেষমেশ হাওড়া ময়দান অব্দি হবে আপাতত, এটার সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদা অব্দি মেট্রো তো চলছেই, শোনা যাচ্ছে হাওড়া থেকে শিয়ালদা জুড়তে পারে শিগগিরই।   এছাড়াও পরে বেশ কয়েকটা রুট বেড়েছে যার কাজ চলছে ফুল ফ্লেজে - যেমন এয়ারপোর্ট থেকে নিউ গড়িয়া। এর নিউ গড়িয়া থেকে রুবি বা সাইন্স সিটি খুব তাড়াতাড়ি খুলে যেতে পারে ইন্টারনেটে দেখলাম। নিউটাউনের সব কটা স্টেশনেও জোরকদমে কাজ চলেছে, সেটা তো নিজে চোখেই দেখেছি।  এয়ারপোর্ট থেকে নোয়াপাড়া বোধ হয় কাজ চলছে।  বারাসাতের দিকেও একটা মেট্রো যাওয়ার কথা শুনেছি।  অনেক কাজ হচ্ছে।  তবে দিল্লীর ক্ষেত্রে মেট্রোর এই নেটওয়ার্ক ঈর্ষণীয়। দশটা লাইন, দুশছাপ্পান্নটা স্টেশন, সাড়ে তিনশ কিলোমিটারের নেটওয়ার্ক। কলকাতায় সেখানে তিনটে লাইন, চল্লিশটা স্টেশন, ছেচল্লিশ কিলোমিটারের নেটওয়ার্ক। অথচ, দিল্লী মেট্রো চালু হয় দুহাজার দুই সালে, আর কলকাতা মেট্রো তার থেকে আঠের বছর আগে। ইনফ্যাক্ট ব্যাঙ্গালোর, হায়দ্রাবাদ, চেন্নাই ও মেট্রো নেটওয়ার্কে কলকাতার থেকে এগিয়ে গেছে। এই সব নিয়েই এবারের এই এপিসোড --- Send in a voice message: https://podcasters.spotify.com/pod/show/srijaner-podaboli/message
Dipanwita Lokkhi Pujo
04-11-2023
Dipanwita Lokkhi Pujo
দূর্গা পুজো পেরিয়ে গেল, লক্ষী পুজো ও শেষ। আগের এপিসোড যেখানে শেষ করেছিলাম, আজ সেখান থেকে শুরু করি - বসিরহাট চত্তরে মানে বসিরহাটে, টাকিতে বা আশেপাশের অঞ্চলে বেশিরভাগ বাড়িতে লক্ষীপুজো কিন্তু কোজাগরী লক্ষীপুজোর দিনে হয়নি, সেটা হবে কালীপুজোর দিনে। আমাদের বাড়িতেও তাই। বসিরহাট ছেড়ে এলেও রীতিগুলো পাল্টায়নি। ক্যালেন্ডারের লক্ষীপুজো কোজাগরী লক্ষী পুজো আর কালীপুজোর দিনেরটা দীপান্বিতা লক্ষী পুজো।  আমার জন্য এটা খুব একটা মজার ব্যাপার ছিল. আমার মামার বাড়িতে হয় কোজাগরী লক্ষী পুজো। এই পুজোটা করা হয় মাটির সড়ায় আঁকা লক্ষীর পটে। যখন ছোট ছিলাম - পুজোর পর মামার বাড়ি যেতাম ওখানে একটা লক্ষীপুজো আর তারপর বসিরহাটে ফিরে বাড়িতে আর একটা লক্ষীপুজো।  তার মানে দুবার নাড়ু খাওয়ার সুযোগ। নমস্কার আমি সৃজন, আজ আমার এই পডকাস্ট, সৃজনের পডাবলীতে শোনাচ্ছি - আমাদের বাড়ির লক্ষীপুজোর গল্প।  আমাদের বাড়িতে পুজোটা মূর্তিতে কিংবা পটে হয় না, হয় আড়িতে। এবার আপনি জানতে চাইবেন, আড়ি জিনিসটা কি। ওটা বেত দিয়ে বানানো গোল একটা পাত্র।  তার চার দিক দিয়ে বেতের চারটে স্টিক উঠে উপরে একজায়গায় মিলে যায়।  সেখানে, মানে টপটা গোল একটা চাকতি আর চারটে যে হাত উঠেছে তাতেও গোল চাকতি বানানো থাকে। পাত্রটা ধান দিয়ে ভরাতে হয়, তার সাথে একটা সোনার জিনিস, কড়ি এই সব দিয়ে লাল চেলি পরানো হয়, সাথে থাকে সিঁদুর কৌটো । এভাবে আড়ি সাজিয়ে তাকে লক্ষী ঠাকুর হিসাবে পুজো করা হয়। এর সাথে অলক্ষী বিদায়ের একটা ব্যাপার আছে। কলার খোলায় চালের গুঁড়ো দিয়ে অলক্ষী বানিয়ে, বাড়ির বাইরে সেটার পুজো করে ভাঙা কুলো বাজাতে বাজাতে চার রাস্তার মোড়ে রেখে আসতে হয়।  আরো ডিটেল নিয়ম কানুন আছে, আমার অতটা জানা নেই।  একদম ছোটবেলায় ভাবতাম ক্যালেন্ডারের লক্ষীপুজোর দিন কেন লক্ষীপুজো হয় না। পরে দেখলাম দুবার পুজোর নাড়ু বা অন্যান্য প্রসাদ খাওয়ার মজাটা বেশি। এখন মনে হয় ধানকে পুজো করার থেকে বড় আর কি হতে পারে একজন বাঙালির কাছে, সাথে সোনা আর কড়ি, মানে সেই আমলের কয়েন। ধন ধান্যে থাকো আলো করে বলার জন্য এর থেকে বেটার উপায় আর কিই বা হতে পারত। আর এই হেমন্ত কালেই তো ঘরে নতুন ধান ওঠে। হয়ত ধান ওঠার জন্য আর একটু সময় পাওয়া যাবে বলে দীপান্বিতা লক্ষী পুজো, কোজাগরী থেকে আর একটু পড়ে হওয়ার রীতি শুরু হয়েছিল।  লক্ষীপুজোর প্রসাদ নিয়ে কিছু না বললে অন্যায় হবে। আমার দাদু মানে বাবার বাবা ওনারা চার ভাই।  সবার বাড়ি পরপর, তো ছোটবেলায় দেখতাম এই চার বাড়ির সব মহিলারা এক সাথে একটা বাড়িতে বসে নাড়ু বানাতেন, খইয়ে টাটকা গুড় জ্বালিয়ে মুড়কি বানাতেন। আবার মামার বাড়িতে দেখতাম দিদারা নারকেল দিয়ে একটা জিনিস বানাতেন। নারকেল বাটা, গুড়, কর্পূর, এলাচ - এসব দিয়ে বানানো একটা জিনিস, সেটাকে পাথরের ছাঁচে ফেলে একটা মিষ্টি আইটেম বানানো হত, এটাকে গঙ্গাজলি বা তক্তি এই দুটোর কোন একটা বলা হত, আমার নামটা ঠিক মনে পড়ছে না এখন।  নাড়ু , মুড়কি এসব তো এখন দোকানে পাওয়া যায়, কিন্তু ওই জিনিসটা আর কোথাও দেখিনি। আর দোকানের নাড়ুর স্বাদ নিয়ে কিছু না বলাই ভালো। দীপান্বিতা লক্ষী পুজোয় আমার বাড়িতে আসার নেমন্তন্ন থাকল।  নাড়ু, মুড়কি খাওয়াবো। আসবেন কিন্তু। ভালো থাকবেন , সুস্থ থাকবেন, সৃজনের পডাবলী ফলো সাবস্ক্রাইব করা না থাকলে করে রাখবেন। কথা হবে শিগগিরই।  আজ চলি।  টাটা।      --- Send in a voice message: https://podcasters.spotify.com/pod/show/srijaner-podaboli/message
Ichamatir Bijaya - ইছামতির বিজয়া
29-10-2023
Ichamatir Bijaya - ইছামতির বিজয়া
শুভ বিজয়া। আর একটু আগে এসে বলা উচিত ছিল, জানি। আসলে পুজোর আমেজ কাটিয়ে উঠে কিছু করতে একটু ল্যাদ লাগছিল, আমার একটা এক্সকিউজ ও ছিল - ছোটবেলায়, পুরোনো একটা পূজাবার্ষিকী আনন্দমেলায় একটা ফান্ডা পড়েছিলাম - আপটু লক্ষী পুজো বিজয়া করা যায়, খুব সম্ভবত দুলেন্দ্র ভৌমিকের লেখা হারাধন গল্পে এটা ছিল।হয়ত এই এপিসোড এডিট করে আপনার কাছে পৌঁছাতে আরো এক দু দিন লাগবে, আমি রেকর্ডই করছি লক্ষী পুজোর দিনে ।  ছোটবেলা , বিজয়া এসব কথা উঠল যখন তখন আজ, আমি সৃজন, আমার এই পডকাস্ট সৃজনের পডাবলীতে, আমার ছোটবেলার বিসর্জন দেখার গল্প শোনাই আপনাকে, শুনবেন ?  আপনি হয়ত টাকির বিসর্জনের কথা শুনে থাকবেন বা টিভিতে দেখে থাকবেন, চাক্ষুস ও হয়ত করে থাকবেন কখনো। আমাদের বসিরহাটের বিজয়া ও একই রকম। তবে টাকির পপুলারিটির একটা বড় কারন ওপারে বাংলাদেশ - সাতক্ষীরা। শেষ কয়েক বছর কড়াকড়ি হচ্ছে অনেক - আগে এরকম ছিল না।  এপার বাংলা ওপার বাংলার ইছামতীতে এক হয়ে যেত। দু দেশের নৌকা পাশাপাশি এলে লজেন্স বিনিময় হত। আবার বিসর্জনের পর যে যার পাড়ে, যে যার দেশে। জানেন হিন্দু মেজরিটির ওপারের ওই জায়গাটার কিন্তু বাংলাদেশ, বা বলা ভালো পূর্ব পাকিস্তান হওয়ার কথা ছিল না। র‍্যাডক্লিফ লাইন কিন্তু খুলনাকে ভারতেই রেখেছিল, সেই গল্প নাহয় অন্য একদিন করা যাবে।  ছোটবেলায় শুনতাম সাতক্ষীরাতেও নাকি আমাদের আত্মীয়স্বজন আছেন। বাংলাদেশের কোনো রিলেটিভ মারা গেলে চার পাঁচদিন পরে হয়ত খবর আসত।  তখন অবশ্য বেশ বিরক্তই লাগত।  একটা লোক যাকে চিনি না, যার মারা যাওয়ায় আমার কোন ফিলিংসই নেই, থাকে অন্য দেশে - তার জন্য  মাছ মাংস বন্ধ কয়েকদিন, ভালো লাগে ? বলুন।  বিসর্জনের কথায় ফিরি। বসিরহাটের বিসর্জন আর টাকির বিসর্জন কিন্তু একই রকম। তবে টাকির সাথে ভারত - বাংলাদেশ ব্যাপারটা যেটা থাকে, বসিরহাটে সেটা নেই। নৌকার সংখ্যা বোধ হয় বেশি বসিরহাটে, আর শুধু প্রতিমার নৌকা তো নয়, সাধারণ মানুষ ও নৌকা করেন নদীতে থেকে এটা এক্সপিরিয়েন্স করার জন্য। তবে সবাই নৌকায় ওঠেন এমনও নয়, নদীর দুপাড়ে অসংখ্য মানুষ ভিড় করেন এই বিসর্জন দেখার জন্য। কভারের ছবিটা দেখে কিছুটা আন্দাজ করতে পারছেন আশা করি. এটা বসিরহাট ফেসবুক গ্রূপে অলীক মন্ডলের পোস্ট থেকে নেওয়া। আমি নিজে নৌকায় উঠেছি দু-তিন বার।  একদম ছোট বেলায় পাড়ে দাঁড়িয়ে দেখতাম। আর কলেজে ওঠার পর বন্ধুরা যখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেছি। পুজোর কদিন শুধু বসিরহাটে একসাথে সবাই জড়ো হতাম, তখন ইছামতীর ধারে আমাদের আড্ডা দেওয়ার জায়গা থেকে দেখতাম অনেকটা দূরে নৌকাগুলো ঘুরছে।  কলকাতার বনেদি বাড়ির অনেক পুজোর বিসর্জনও শুনেছি, নৌকায় ঠাকুর নিয়ে গিয়ে তারপর গঙ্গায় নৌকাকে সাতপাক ঘুরিয়ে তারপর বিসর্জন দেওয়া হয়।  তবে বসিরহাট বা টাকিতে যে গ্র্যান্ড স্কেলে ব্যাপারটা হয়, সেটা অন্য কোথাও হয় বলে আমার জানা নেই।  আজ লক্ষী পুজো সেটা নিয়েই এপিসোড করা উচিৎ ছিল।  তাই না ? কিন্তু জানেন, আমাদের বাড়ির লক্ষী পুজো কিন্তু আজ নয়, সেটা হয় অন্য এক দিনে, সেই গল্প বলব আগামী এপিসোডে।   ভালো থাকবেন , সুস্থ থাকবেন, সৃজনের পডাবলী ফলো সাবস্ক্রাইব করা না থাকলে করে রাখবেন। কথা হবে শিগগিরই।  আজ চলি।  টাটা।      --- Send in a voice message: https://podcasters.spotify.com/pod/show/srijaner-podaboli/message
Ailo Uma Barite / আইলো উমা বাড়িতে
22-10-2023
Ailo Uma Barite / আইলো উমা বাড়িতে
এই এপিসোডে এক জায়গায় 1757 এর বদলে 1957 বলা হয়েছে, এজন্য ক্ষমাপ্রার্থী । তথ্য সূত্র - পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি - পর্ব 1,2,3 - বিনয় ঘোষ, দীপ কলকাতা শহরের ইতিবৃত্ত - বিনয় ঘোষ - দীপ তেরো পার্বণের ইতিকথা - জহর সরকার - দেজ চালচিত্র - সুধীর চক্রবর্তী - হরপ্পা আলি নগরের গোলক ধাঁধা - সৌগত বসু - বুকফার্ম কলিকাতা বৃত্তান্ত - কচি পাতা থেকে বাবু কলকাতার পুজো পার্বণ - শুভঙ্কর মাজি দুর্গা পুজোর শুরু কবে ? না প্রশ্নটা ভুল হল। আপনি শ্রীভূমি টাইপের বড় পুজোর লোক হলে বলে বসবেন - হাম যাহা খাড়া হোতে হয়…মানে আমরা পুজো শুরু করলেই পুজোর শুরু। প্রশ্নটা রি ফ্রেজ করি বরং - বাংলায় দুর্গা পুজোর প্রচলন কবে থেকে ? নানা মুনির নানা মত। একটা ছোট বাচ্চার যেমন প্রশ্ন থাকে - আমি এলাম কি করে ? আমাকে কোথা থেকে নিয়ে এলে তোমরা । সেই একই কৌতূহল নিয়ে জানতে চেষ্টা করেছিলাম, বাংলায় দুর্গা পুজোর শুরু কবে? কোথায়? কেন? কীভাবে? উত্তর যে সব পেয়েছি এমন নয় । বরং আরো কিছু প্রশ্নের জন্ম হয়েছে। আমি সৃজন, আপনার সঙ্গে সেগুলোই শেয়ার করব আমার এই পডকাস্ট সৃজনের পডাবলীর এবারের এপিসোডে। আর এক অলৌকিক দুর্গাপুজোর একটা গল্প বলব শেষে। প্রথমেই জানাই শারদ শুভেচ্ছা। দুর্গা পুজোর শুভেচ্ছাটা বাসন্তী শুভেচ্ছা ও হতে পারত । মার্কণ্ডেয় পুরাণে প্রথম দেবী দুর্গাকে মহিষাসুর বধ করতে দেখা যায়। আর ফিজিক্যাল মূর্তির কথা বললে - রাজস্থানের নাগরে পাওয়া টেরাকোটার মূর্তির কথা বলতেই হয়। খুব সম্ভবত প্রথম শতাব্দীর সেই মূর্তিতে মহিষ, ত্রিশূল, সিংহ সব পাওয়া যায় - তবে দেবী চতুর্ভুজা। তবে গ্লোবালি দেখলে সিংহবাহিনী দেবীর অভাব নেই। মেসোপটেমিয়ায় 'ইসথার' , গ্রিসে 'আস্তারতেন', ট্রয়ে 'সিবিল' - এনারা কয়েক হাজার বছর ধরেই ছিলেন। তবে এই শরৎকালের অকালবোধনের গল্প প্রথম শোনা যায় কৃত্তিবাসী রামায়নে। কিন্তু তখনো দেবী একা। ছেলে মেয়ে নিয়ে ভরা সংসার দেখা যায়নি। ইন ফ্যাক্ট এই ছেলে মেয়ে নিয়ে দেবী দুর্গা একেবারেই বাংলার নিজস্ব কনসেপ্ট। বাকি ভারত এই সময় নবরাত্রি পালন করছে নয় দিন দেবীর নয় রূপে, ভাত রুটি, ময়দা, সুজি, পেঁয়াজ , রসুন, লঙ্কা, মশলা পাতি সব বন্ধ। বাংলায় আজ লুচি তো কাল পাঁঠা। রাস্তায় বেরোলে এগ রোল, চাউমিন, বিরিয়ানী, মোগলাই এসব তো আছেই। যদিও আগে নন ভেজ বলতে মূলত দেবীকে বলি দেওয়া পশুর মাংসই মূলত খাওয়া হত। তবে রাজস্থানের রাজপুতরা বা দেশের অন্যান্য অনেক জায়গায় শাক্ত মতে দেবীর সামনে মহিষ অথবা ছাগল বলি দেওয়ার প্রথা আছে। শুরুর দিকে বাংলার সব পুজোতে এটা কিন্তু ছিল। সময়ের সাথে সাথে এই ব্যাপারটা অলমোস্ট বন্ধ হয়ে গেছে। তবে এখনো শতাব্দী প্রাচীন কিছু পুজোতে এই প্রথা আছে বলে শোনা যায়।   যাই হোক, এখন আমরা ছানা পোনা নিয়ে দেবীর যে রূপ দেখি সেটা খুব সম্ভবত বারো ভূঁইয়ার এক রাজা তাহেরপুরের কংশ নারায়ণ শুরু করেছিলেন। এই তাহেরপুর এখনকার বাংলাদেশের রাজশাহীতে। অন্য দিকে বিষ্ণুপুরের মৃন্ময়ীর যে রূপ আমরা দেখি সেখানেও ছেলে মেয়ে আছে, তবে সিকোয়েন্স আলাদা। লেফট টু রাইট লক্ষী প্রথমে নিচে, গণেশ উপরে, মাঝে দশভুজা দুর্গা, কার্তিক আর ডানদিকে নীচে সরস্বতী। এটা খুব সম্ভবত মল্ল রাজা জগৎ মল্ল শুরু করেছিলেন। এবার যদি আমরা ধরে নেই, এটা জগতমল্ল নয়, বারো ভূঁইয়ার আর এক রাজা বীর হাম্বির শুরু করেছিলেন এই দুর্গা পুজো, যিনি কংশ নারায়ণের সমসাময়িক , তাহলেও মোটামুটি একটা সময়ের আন্দাজ পাওয়া যায়। এছাড়াও এনাদের থেকে কিছু আগে, ফরটিন্থ সেঞ্চুরির রাজা জগৎরাম রায়ের নাম শোনা যায় যিনি নাকি বাংলায় দুর্গোৎসব শুরু করেছিলেন। কিন্তু সেভাবে কোন ডকুমেন্টেশন না থাকায় এগুলোর কোনটা সত্যি আর কোনটা কেবলই মিথ সেভাবে জানা যায় না। এই রাজাদের থেকেও পুরোনো একজন দুর্গা উপাসক ছিলেন এই বাংলায় - ইছাই ঘোষ। আজ থেকে মোটামুটি হাজার বছর আগে , এখনকার বর্ধমানে জয়দেব কেন্দুলির পূবদিকে অজয়নদের দক্ষিণতীরে গৌরাঙ্গপুর বলে যে গ্রাম আছে, সেটাই খুব সম্ভবত এক সময় ছিল ঢেক্করী বা ঢেকুর বা ত্রিষষ্ঠীগড়। সেখানে ছিলেন রাজা ঈশ্বর ঘোষ বা ইছাই ঘোষ। তিনি দেবী দুর্গার উপাসক। অজয়ের অপরপারে আছে, লাউসেন তলা। লাউসেন ছিলেন ধর্মঠাকুরের উপাসক। লাউসেন যুদ্ধে কিন্তু ইছাই ঘোষকে হারিয়ে দেন। অর্থাৎ বাংলার নিজের দেবতা ধর্ম, যিনি রাস্তার ধারে গাছের তলায় পাথর রূপে থাকতেন, তিনি কিন্তু লড়াই করে বৈদিক দেবতাকে হারিয়ে দিতেন। মধ্যযুগ পর্যন্ত বাংলায় লোকদেবীর যে প্রাধান্য, ষষ্ঠী, শীতলা, মনসা, ধর্ম সেটা আস্তে আস্তে মেনস্ট্রিমে মিশতে থাকে মঙ্গলকাব্যর সময় থেকে। মুকুন্দরাম, রূপরাম, ঘনরাম, খেলারাম এনারা লেখেন - মনসামঙ্গল, চন্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল। একইভাবে শিবায়নে শিব হয়ে ওঠেন আমাদের নির্ভেজাল বাঙালি ভোলানাথ। উত্তর ভারতীয় শিবের চেহারা আর বাংলায় ভুঁড়িওয়ালা শিবের চেহারায় যে পার্থক্য সহজেই লক্ষ্য করা যায়।  --- Send in a voice message: https://podcasters.spotify.com/pod/show/srijaner-podaboli/message
Boiyer Shopping Mall
12-10-2023
Boiyer Shopping Mall
Digital Safety : Amazon : https://amzn.to/45i0JRY Sristisukh : https://sristisukh.com/ss_new/product/digital-safety/ আগেরবার যখন কলকাতা গেলাম, সেবার দেখে এলাম ইনস্টাগ্রামে ট্রেন্ডিং বইয়ের শপিং মল স্টোরি। জায়গাটা আমার বাড়ির কাছেই , সল্টলেক স্টেডিয়ামের কাছে। স্পেসিফিক্যালি বললে, সল্টলেক আমরি থেকে বাইপাসের দিকে যেতে গেলে বাঁ দিকে পড়বে, সাই এর গেটের উল্টো দিকে। এমন নয় যে আগে এই টাইপের বইয়ের দোকান কলকাতায় ছিল না। অক্সফোর্ড, ক্রসওয়ার্ড এগুলো তো ছিলই। কিন্তু একটা উঁচু হলকে কাঠের সিঁড়ি লাগিয়ে তিনতলা চমৎকার একটা ব্যাপার বানানোর আইডিয়াটা দারুন। ইনফ্যাক্ট দশম অবতারের একটা গানে অনির্বাণ আর জয়া আহসানকে ওখানে প্রেম করতেও দেখা গেছে। এবার দশম অবতারের ব্যাকড্রপ যেহেতু এখন থেকে কুড়ি বছর আগে, সেখানে ওনারা টাইম ট্রাভেল করে কি করে গেলেন সেটা নিয়ে দেখলাম ফেসবুকে প্রশ্ন উঠেছে। তবে সিনেমা আর বাস্তব আলাদা, ওটা নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই। তবে পুজোয় কলকাতা থাকছি। সময় সুযোগ পেলে সিনেমাটা দেখার ইচ্ছে আছে। দেখা যাক, হয় কি না। যদিও এই এপিসোড দশম অবতার নিয়ে নয়। আজ আমার এই পডকাস্ট, সৃজনের পডাবলীতে আমি সৃজন আড্ডা দেব, সাজানো গোছানো, ট্রেন্ডিং এই বইয়ের দোকান নিয়ে।  বইমেলা এপিসোডে বলেছিলাম মনে আছে, বইমেলা একমাত্র এমন একটা জায়গা যেখানে গেলে মনে হয় আমার একটু পয়সাকড়ি থাকলে ভালো হত, অনেক বইপত্তর কিনতে পারতাম, বাকি জাগতিক লোভ লালসা আমার একটু কমের দিকেই। এই দোকানে গিয়েও কিছুটা বইমেলার মতনই অবস্থা। প্রচুর বই , খুব সুন্দর করে সাজানো আছে। সব রকমের বইই আছে মোটামুটি , তবে ইংলিশ বই ই বেশি, বা প্রায় পুরোটা জুড়ে ইংলিশ বই। বাংলা বই, দোতলার এক কোনায়।  সংখ্যায় ও কম। তবে ফেলুদা - ব্যোমকেশ টাইপের পপুলার বই আছে দেখলাম। বই ছাড়াও পেন , কফি মগ, নোটপ্যাড এসব ও আছে। বই নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখার জন্য বেশ ভালো জায়গা। যে জিনিসটা অনলাইনে করা যায়না। হাতে একটা বই নিয়ে দেখলে, দু পাতা পড়লে, সেটা কেনার চান্স বোধ হয় বেড়ে যায়। যে জন্য বইমেলায় যত বই বিক্রি হয়, বাকি সময় তত বই খুব সম্ভবত বিক্রি হয় না।  কলেজ স্ট্রিতেও লোকে যখন যায়, আগে থাকতে বইয়ের লিস্ট করেই যায়।  সেখানে গিয়ে বইয়ের নাম বলে বইটা কিনে আনে। এভাবে তাক থেকে বই নিয়ে দুপাতা পড়ে বই কেনা হয় কি ? আমি তো করিনি কখনো।  যেদিন স্টোরিতে গেছিলাম, ছেলের জন্য দু তিনটে বই কিনলাম, ওর বয়সের জন্য সুটেবল বই। আমার নিজের জন্য দু চারটে বই হাতে তুলেও নিয়েও শেষ পর্যন্ত রেখে এসেছি। পরের দিন গেলে হয়ত আগে ওগুলো কিনব। বইগুলো রেখে এসেছি কারন, এত গুলো পূজাবার্ষিকী কিনেছি - সেগুলো পড়তে হবে আগে।  না হলে বই কিনে পড়েই থাকবে। আনন্দমেলা কিছুটা পড়েছি, অন্তরীপ শুরু করেছি। দেশ , কিশোর ভারতী, শুকতারা , প্রতিদিন পড়ে আছে। শুরু করা হয়নি এখনো।  ও একটা কথা তো বলতেই ভুলে গেছি, স্টোরিতে একটা জিনিস বেশ খারাপ লাগল। ওরা সৃষ্টিসুখের ডিজিটাল সেফটি বইটা রাখেনি। কি কান্ড ভাবুন একবার। তাই বইয়ের শপিং মলে না পেলেও আমাজনে ডিজিটাল সেফটি পেয়ে যাবেন, চাপ নেই। সৃষ্টিসুখের সাইটে তো পাবেনই। এখনো না কিনে থাকলে, কিনে ফেলুন। লিংক ডেস্ক্রিপশনে দেওয়া আছে। না পড়লে বিপদ আপনার, আমার কি! আমার কাজ জানিয়ে দেওয়া, আমি জানিয়ে দিলাম।   ভালো থাকবেন, পুজো আনন্দ করে কাটাবেন , কথা হবে আবার, আজ চলি, টাটা।  --- Send in a voice message: https://podcasters.spotify.com/pod/show/srijaner-podaboli/message
Spotify Podcasters Day 2023, Delhi ... My Experience
26-09-2023
Spotify Podcasters Day 2023, Delhi ... My Experience
তেইশে সেপ্টেম্বর হয়ে গেল স্পটিফাই পডকাস্টার ডে। আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম, দিল্লীতেই হচ্ছে, চলে গেলাম দেখতে। এটা এই ইভেন্টের ফোর্থ এডিশন। এখানে ওনারা ওনাদের রোডম্যাপ, থটপ্রসেস শেয়ার করেন। জানলাম নতুন কিছু। শুনবেন সেগুলো ? একদম বুলেট পয়েন্ট করে বলব।  স্পটিফাইয়ের কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা একজন বাংলা পডকাস্টারকে এই অনুষ্ঠানে ডাকার জন্য।  প্রথম থেকেই বলি, ওনারা মেলে লিখেছিলেন যে - চারটে থেকে অনুষ্ঠান শুরু, তাই সাড়ে তিনটের মধ্যে পৌঁছে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে, ভালো কথা। ওদিকে, সাড়ে বারোটায়, আমি যেখানে থাকি, দ্বারকা, সেখানে আকাশ কাঁপিয়ে বৃষ্টি এল। আগেই গুগল ম্যাপে দেখে নিয়েছিলাম রুট। ছত্ত্বরপুর, মানে যেখানে প্রোগ্রামটা হবে, সেটা ওই, ঘন্টা দেড়েকের ডিসট্যান্স। প্রথমে ভেবেছিলাম, দেড়টার দিকে বেরোব, ছুটির দিনের ল্যাদ খেয়ে বেরোতে বেরোতে দুটো বাজল। ততক্ষনে, বৃষ্টি থেমে গেছে।  কিন্তু আমার টিপিক্যাল বাঙালীসত্ত্বা বাধ্য করল ছাতা সাথে নিয়ে বেরোতে। আমার বাবাকে সবসময় দেখেছি, কোথাও গেলে ছাতা আর জলের বোতল সাথে থাকবেই। রাস্তায় আর বৃষ্টি পাইনি, যেটা পেয়েছি - দিল্লির কুখ্যাত জ্যাম। আসছি সেটায়। দিল্লীতে আসার পরেই পরেই পরিচিত অফিস কলিগ যারা এখানে আগে থাকতে আছে - তারা বলে দিয়েছিল, পুরোনো দিল্লীর দিকে যেতে হলে, মেট্রোর থেকে ভালো অপশন কিছু নেই আর এখানকার জ্যাম ভয়ানক।   বাড়ি থেকে বেরিয়ে টোটো করে পালাম মেট্রো স্টেশন, যেটা পড়ে ম্যাজেন্টা লাইনে, পালাম থেকে হজ খস , সেখানে লাইন পাল্টে ইয়েলো লাইন। এই হজ খস এই মুহূর্ত ভারতের ডিপেস্ট মেট্রো স্টেশন। মাটি থেকে পঁচানব্বই ফুট  নিচে। যদিও আমাদের হাওড়া মেট্রো স্টেশন চালু হয়ে গেলে সেই স্টেশন হবে আরো ডিপ, মাটির থেকে একশ আট ফুট নিচে। যাই হোক, ইয়েলো লাইন ধরে ছত্ত্বরপুর স্টেশনে নামলাম তিনটের একটু আগে। ওখান থেকে আরো এগারো কিলোমিটার মতন যেতে হবে।  নেমে অটোর সাথে দরদাম করে দুশো টাকায় রফা হল। বাকিরা আড়াইশ, তিনশ এরকম রেট হাঁকছিল।  কিছুটা যাওয়ার পরেই শুরু হল জ্যাম। অটো নড়েই না। সেই জ্যাম ঠেলে যেতে কুড়ি - পঁচিশ মিনিটের রাস্তা লাগল এক ঘন্টা দশ মিনিট।  গিয়ে পৌঁছে দেখি, তখনো শুরু হয়নি। আমরা মজা করে বাঙালির টাইম বলি বটে, বিদেশী কম্পানিও দেখি খুব একটা ঘড়ি ধরে চলে না। তেইশে সেপ্টেম্বর দুহাজার তেইশে এই অনুষ্ঠান, এর ঠিক এক বছর আগে বাইশে সেপ্টেম্বর, দু হাজার বাইশ এরকমই একটা অনুষ্ঠান হয়েছিল কলকাতায় - ITC রয়্যাল বেঙ্গলে।  সেই অনুষ্ঠানে আলাপ হয়েছিল এরকম দুজনকে দেখতে পেলাম।  ধ্রুবাঙ্ক বৈদ্য আর ঋতুরাজ সিং। ধ্রুবাঙ্ক, স্পটিফাই ইন্ডিয়ার পডকাস্ট হেড। চিনতে পারলেন। বললেন - আমি কন্টিনিউ করছি দেখে ভালো লাগছে ওনার। বললাম - শুধু আমি নই আমাদের অনেকেই কন্টিনিউ করছে, খুব ভালো ভালো কাজ হচ্ছে, পার্থ, সায়ন এদের নিয়ে কথা হল। শুধু তাই নয় - পরে যারা শুরু করেছেন তাদের মধ্যেও নতুন নতুন খুব ভালো কাজ। তাদের ও কয়েকজনের কথা হল।  নিবেদিতার কথা হল - কিভাবে নিজের চ্যালেঞ্জকে জয় করে পডকাস্ট করছে শুনে খুশি হলেন, ঐশ্বর্য জার্মানিতে থেকে বাংলায় পডকাস্ট করছে এটাও ওনার কাছে খুব ইন্টারেস্টিং লাগল। গ্লোবালি ধীরে ধীরে বাংলা কন্টেন্ট জনপ্রিয় হচ্ছে এটা বললেন উনি। তবে ক্রাইম, হরর এই জনার খুব বেশি জনপ্রিয় এখনো, কিন্তু নন ফিকশনে সিগনিফিক্যান্ট গ্রোথ শুরু হয়েছে । ঋতুরাজের সাথে খুব একটা কথা বলার সুযোগ হল না।  জাস্ট - হাই হ্যালো টাইপ।  পৌনে পাঁচটার দিকে গিয়ে শুরু হল অনুষ্ঠান। প্রথমে কুইজ। মেন্টি ডট কম বলে একটা পোর্টাল খুলতে হবে ফোনে। তাতে একটা কোড দিতে হবে। ৫টা প্রশ্ন, MCQ তার সাথে ফাস্টেস্ট ফিঙ্গার ফার্স্ট। ফোনেই অপশন সিলেক্ট করতে হবে পনের সেকেন্ডের মধ্যে। আমার দুটো না তিনটে ঠিক হয়েছিল। স্বাভাবিক ভাবেই প্রাইজ পাওয়ার চান্স নেই। এর পর বক্তব্য রাখতে উঠলেন অমরজিৎ বাত্রা - এমডি স্পটিফাই ইন্ডিয়া এবং জিএম - সাউথ এশিয়া, মিডল ইস্ট ও আফ্রিকা।  ওনার পর বক্তব্য রাখলেন - ধ্রুবাঙ্ক বৈদ্য। এই অংশ প্রায় পুরোটা আমার ইউটিউব চ্যানেলে দিয়েছি। ভারতে পডকাস্ট মানুষ সব থেকে বেশি শোনে স্পটিফাইতে। ওনারা কি ভাবছেন, কি করবেন, সেটা জানা কিন্তু জরুরী।     এর পরের সেশনটায় ছিলেন চার জন একসাথে - Durga Raghunath, Aryaan Misra, Ankur Warikoo এবং Leeza Mangaldas . দূর্গা মিডিয়ার লোক, গুগল নিউজের হেড অফ পার্টনারশিপ, আরিয়ান মিশ্রার দেশি ক্রাইম পডকাস্ট বিশাল পপুলার, লিজা মঙ্গলদাসের the sex podcast কে তিনি বলছেন - honest, accurate, judgment-free answers to your most asked sex-related questions. আর Ankur Warikoo র প্রোফাইল তো বিশাল বড় - স্টার্ট আপ ফাউন্ডার, মোটিভেশনাল স্পিকার, ইউটিউবার, পডকাস্টার আরো কত কি । তার পরের সেশনে  - রাজকুমার রাওয়ের সাথে কথা বললেন বরখা দত্ত। যেমনভাবে এখনকার গেস্ট পডকাস্টগুলো হয় সেরকম ফরম্যাটে।  --- Send in a voice message: https://podcasters.spotify.com/pod/show/srijaner-podaboli/message
Tomake Chai ...
18-09-2023
Tomake Chai ...
Na Chahile Jare Paoa Jay চা লাগবে ? আরে চা ছাড়া আমাদের চলে নাকি ? ট্রেনের জার্নি হোক বা অফিসের সিরিয়াস মিটিং, সকালে ঘুম ঘুম ভাব কাটাতেই হোক  বা সন্ধেবেলা টিভিতে শাশুড়ি বৌ এর ঝগড়া দেখার সময় - চা লাগবেই, অতিথি এলে তো কথাই নেই এবং এটার জন্য কাউকে কিছু বলতেও  হয় না, এতটাই আমাদের অভ্যেসে ঢুকে গেছে। অথচ, আজ ভাবলে অবাক লাগবে, এটা কিন্তু আমাদের acquired taste, চা খাওয়ার অভ্যেস আমাদের বেশ নতুন। ব্রিটিশ সাহেব এবং কিছু দেশি বাবুর বাইরে মাস স্কেলে চা খাওয়া শুরু হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে।  এই এপিসোডটা কালীদার চায়ের দোকানে হলে বেশি ভালো হত।  দিল্লীতে চায়ের দোকান নেই এমন নয়।  যা আছে তার সাথেই মানিয়ে চলছি। চায়ের সাথে একদল মানুষের দুঃখের, কষ্টের একটা গল্প আছে, সেটা বলব আজ, তবে এপিসোড পুরোটা শুনতে হবে। কথা দিচ্ছি - আপনার কাপের চা ঠান্ডা হওয়ার আগেই এপিসোড শেষ হয়ে যাবে।  চা তাড়াতাড়ি শেষ করা নিয়ে একটা মজার জিনিস মনে পড়ল - আমার কলকাতার অফিসের এক সিনিয়র কলিগকে এত দ্রুত গরম চা শেষ করতে দেখেছি, যে একদিন তাকে মজা করে বলেছিলাম, কে কতদিন চাকরি করছে সেটা কে কত তাড়াতাড়ি গরম চা শেষ করছে সেটা দেখে বোঝা যায়। আসলে বাড়িতে চা যতটা আয়েস করে খাওয়া হয়, অফিসে কাজের তাড়ার জন্য সেটা কখনোই হয় না।    এই এপিসোড শুরু হয়েছে ট্রেনে চা বিক্রির সাউন্ড দিয়ে, এর মধ্যে রাজনীতি খুজবেন না প্লিজ, ভারতবর্ষে জনগনের মধ্যে চায়ের জনপ্রিয়তা শুরু হয়েছিল ট্রেন স্টেশনের মধ্যে দিয়েই। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে ভারতে বড় বড় স্টেশনে চায়ের দোকান লাগানোর ব্যবস্থা হয়েছিল ব্রিটিশ শাসকের তরফে, যাতে ভারতীয়রা চা সম্পর্কে জানতে পারে, চায়ের একটা পপুলারিটি তৈরী হয় । এই কাজে ব্রিটিশরা যে শুধু সফল হয়, তাই নয়, ভারতীয়রা নিজেদের মতন করে চায়ে আদা, এলাচ, গোলমরিচ এই সব ভারতীয় মশলাপাতি দিয়ে জিনিসটাকে অন্য একটা জায়গায় নিয়ে যায়। তবে ভারতের কেউ চা জিনিসটা জানত না এটা বললে ভুল হবে। আসামে দীর্ঘ্যদিন ধরেই চা পাতাকে কিন্তু রান্নার তরকারিতে ব্যবহার হত, তবে এখন যেভাবে চা খাওয়া হয় সেটা হত না।  একটু পিছিয়ে যাই, প্রথম থেকেই বলি বরং।  আমাদের আসাম থেকে শুরু করে চীনের দক্ষিণ পশ্চিম প্রান্ত, যেটা ভারতের লাগোয়া, সেখানে বেশ কিছু জায়গাতেই চা পাতা পাওয়া যায় বহু বহু বছর ধরে।  তবে চীনের পুঁথি পত্রে লেখা আছে, আজ থেকে হাজার পাঁচেক বছর আগে শেন নাং বলে একজন চীনের কোন এক রাজা ছিলেন। তিনি জল ফুটিয়ে খেতেন। তো তার সেই ফোটানো জলে চা পাতা উড়ে এসে পড়ে। চায়ের সুগন্ধ তাকে মুগ্ধ করে। তিনি রেগুলার চা খেতে শুরু করেন, তার পর চীনের পাবলিকের মধ্যে জনপ্রিয় হয়। এই রাজার গল্পটা রণবীর ব্রার KBC তে বলেছেন, ইন্দ্রজিৎ লাহিড়ীর ফুড কাহিনীতেও এই ব্যাপারটা বলা আছে। পার্সোনালি এটা মানতে আমার একটু আপত্তি আছে কারন, হুট্ করে অচেনা অজানা কোন একটা পাতা এসে জলে পড়ল, আর রাজা সেটা খেয়ে ফেললেন - এই ব্যাপারটা আমার খুব একটা লজিক্যাল লাগে না।  সেই সময় রাজাদের অনেক শত্রু থাকত, ফলে - কেউ বিষাক্ত কিছু দিল কিনা এরকম একটা ভয় ও থাকত। তাই রাজা নিজে প্রথমে তিতকুটে একটা পাতা দেওয়া জল খাবেন,  সেটা খুব একটা মনে হয় না।  আর একটু এগিয়ে আসি,ষোলশ খ্রিস্টাব্দ, পর্তুগীজ নাবিকরা সারা পৃথিবী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের হাত ধরে ইউরোপে পাড়ি দিল - চা। চা বলতে - খুব হাল্কা লিকারের চা, তাতে দুধ চিনি এসব তখনো পড়েনি। আরো কিছু বছর পরে ষোলশ বাষট্টি সালে পর্তুগিজ রাজকন্যা ক্যাথেরিন ব্রিগান্জার সাথে ইংল্যান্ডের রাজা চার্লস টু র বিয়ের পর ব্রিটেনে পা রাখল চা।  রাজপরিবারের বৌমা চা খান, ফলে ব্রিটিশ এলিট ক্লাসে সহজেই জায়গা পেয়ে গেল সে। এরপর ব্রিটিশরা ভারতে এসে ঘাঁটি গাড়ে।  এবং ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির ব্যবসার একটা বড় অংশ জুড়ে থাকত চীন থেকে চা নিয়ে সেটা ইংল্যান্ডে পাঠানো। ততদিনে চা সাহেবদের জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে এবং ট্রাডিশনাল চায়ের পাশাপাশি দুধ এবং চিনি দেওয়া ও শুরু হয়ে গেছে বলে জানা যাচ্ছে । --- Send in a voice message: https://podcasters.spotify.com/pod/show/srijaner-podaboli/message
Dillir Biryani, Kolkatar Biryani
10-09-2023
Dillir Biryani, Kolkatar Biryani
বিরিয়ানি বললেই কি মনে পড়ে ? হাল্কা হলুদ - সাদা বাসমতী চালের ভাত যেটা থেকে ঘি আর অন্যান্য মশলার গন্ধ আসছে, তাতে বড় সড় একটা মাটন বা চিকেনের পিস, একটা বড় আলু আর একটা ডিম।  কলেজ লাইফ অব্দি আমি ও তাই ভাবতাম।  এর বাইরেও বিরিয়ানির ভেরিয়েন্ট হতে পারে সেটা জানলাম, যখন চাকরি করতে মাইসোরে গেলাম। সেখানে টেস্ট করলাম - হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি।  সত্যি বলতে সেটাকে আমার জিভ বিরিয়ানি বলে মানতে অস্বীকার করলেও খেতে খুব খারাপ লাগেনি। তারপর চাকরি নিয়ে গেল পুণেতে। সেখানে বিরিয়ানি আমার খুব একটা পোষায়নি। খুব বেশি মশলা আর , তার উপর পুদিনা পাতা। ওটাকে বিরিয়ানি বলে মানতেই ইচ্ছে করেনি। তারপর ভুবনেশ্বরে অবশ্য ঠিক ঠাক বিরিয়ানি পাওয়া যেত, যেটা কলকাতার স্বাদের খুব কাছাকাছি। তারপর তো চাকরি বদলে কলকাতা। অফিস পাড়ায় অফিস। ডালহৌসী , অফিস পাড়ার খাবার দাবার নিয়ে অনেক কিছু বলা যায় , অন্য একদিন বলব। যাই হোক, কলকাতার পর পুরুলিয়া।  সেখানেও দু একটা জায়গা ছাড়া বিরিয়ানি খুব একটা ভালো মনে হয় নি। আর পুরুলিয়ার পর এখন দিল্লী। যেটা বলার জন্য ভারতবর্ষ ভ্রমন করালাম সেটা হল - আমি যত বিরিয়ানি খেয়েছি, সেগুলোর মধ্যে ভারতের সব থেকে খারাপ বিরিয়ানি পাওয়া যায় দিল্লীতে।  নমস্কার আমি সৃজন। আজ সৃজনের পডাবলীর এই বিরিয়ানি স্পেশাল এপিসোডে দিল্লীর বিরিয়ানির নিন্দে করব। সহমত না হলে এপিসোড স্কিপ করতে পারেন।   দিল্লিতে যে বিরিয়ানীটা পাওয়া যায় তার নাম মুরাদাবাদী বিরিয়ানি, এবং এটা কিলোদরে পাওয়া যায়।  আপনি চাইলে আড়াইশ গ্রাম, পাঁচশ গ্রাম, এক কিলো এরকম ওজন করে বিরিয়ানি নিতে পারবেন।  তাতে তেজ পাতা, ধনে পাতা, কাঁচা লঙ্কা এরকম সমস্ত জিনিস পাওয়া যায়। আমি সিওর, বিরিয়ানি বললে এগুলোর কথা আপনার মাথায় আসবে না। যে কোন বিরিয়ানীরই একটা বিশেষত্ব, আপনার সামনে প্লেটে দিলে, পার্সেল করে আসার পর খুললে, তার গন্ধটা আপনার মন ভরিয়ে দেবে, সেটা মিসিং।  খেতেও ঝোল ভাত টাইপের একটা ব্যাপার। এবং এই এপিসোড করার আগে আমি যেখানে থাকি সেখানকার বেশ কিছু ছোট বড় দোকানের বিরিয়ানি যেমন খেয়েছি, তেমনি জামা মসজিদের পাশে করিমসের দোকানের বিরিয়ানি ও খেয়েছি। সব জায়গাতেই equally হতাশ হতে হয়েছে আমাকে। এক বারই গেছি।  আল জাওয়াহার এ ট্রাই করা হয়নি, পরের দিন হয়ত করব, কিন্তু খুব ভালো কিছু আশা করব না।  পশ্চিমবঙ্গের বাইরে রিসেন্ট পাস্টে আমার যে বিরিয়ানিটা সব থেকে ভালো লেগেছিল, সেটা হল আরাকু ভ্যালিতে বোরা কেভস দেখে বেরিয়ে যে ব্যাম্বু বিরিয়ানিটা খেয়েছিলাম সেটা। ওহ ব্যাম্বু বিরিয়ানি শুনে ভাববেন না বিরিয়ানিতে বাঁশ দেয়।  তা নয়, দেয় চিকেন বা মাটনই।  বাঁশের মধ্যে বিরিয়ানির সব কিছু ঢুকিয়ে, মুখ বন্ধ করে, সেটাকে পোড়ানো হয়। ফলে, বাঁশের ভেতর বিরিয়ানিটা দম পেয়ে রান্না হয়।  খুবই ভালো।  কলকাতা বিরিয়ানির মতনই কম স্পাইসি, কম তেল মশলার । খেতেও ভালো। কলকাতা বিরিয়ানীতে কম তেলের ম্যাজিকটা কে করে বলুন তো ? সেটা করে আলু।  আলু রান্নার পুরো ফ্যাটটা absorb করে নেয়।  ফলে ভাতটা আপনার হেভি মনে হয়না।  একটু বেশি সাঁটানো যায়।  যাই হোক, বিরিয়ানি নিয়ে একদম অন্যরকম একটা ঘটনার কথা বলি, হায়দ্রাবাদের এক ভদ্রলোক বিরিয়ানী খাবেন বলে অনলাইনে অর্ডার করেছেন, বিরিয়ানির বদলে ওনার কাছে পৌঁছায় সাম্বার রাইস।  ভদ্রলোক তো রেগে বোম।  অনলাইনে দিলেন কমপ্লেন ঠুকে।  সাথে সাথে ওনার কাছে কম্পানি থেকে ফোন এল - না না, ভুল হয়ে গেছে, এক্ষুনি রিফান্ড করে দিচ্ছি  - একটা QR পাঠাচ্ছি, স্ক্যান করে আপনার UPI পিন দিয়ে approve করে দিন, টাকা সাথে সাথে পেয়ে যাবেন। বাকিটা বুঝতেই পারছেন, QR স্ক্যান করে পিন দিলে একাউন্ট থেকে টাকা যাবেই। এই রকম অনেক ঘটনা আর তার সাথে সাথে, কি কি সতর্কতা মেনে চলতে হবে সেই সব বলা আছে সৃষ্টিসুখ থেকে প্রকাশিত ডিজিটাল সেফটি বইতে। পড়তে পারেন। হয়ত কিছু বিপদ এড়াতে পারবেন। না পড়লে বিপদে আপনি পড়বেন আমার কি , এমনিতেও বইয়ের দাম এক প্লেট বিরিয়ানির থেকে কম।  https://sristisukh.com/ss_new/product/digital-safety/ https://amzn.eu/d/ajE2sae https://www.peepultree.world/livehistoryindia/story/living-culture/who-put-the-potato-in-the-kolkata-biryani https://www.timesnownews.com/business-economy/personal-finance/planning-investing/article/man-loses-half-a-lakh-in-online-fraud-because-of-biryani-know-how/553633 --- Send in a voice message: https://podcasters.spotify.com/pod/show/srijaner-podaboli/message
Bhadoro Ashino Mashe Chata Dharo He / Offbeat Purulia / Part 5
27-08-2023
Bhadoro Ashino Mashe Chata Dharo He / Offbeat Purulia / Part 5
ভাদ্রমাস পড়ে গেছে । এই মাস যেমন তালের বড়ার মাস, তেমনিই এই মাস রাঢ় বাংলায় ভাদু পুজোর মাস। ভাদ্র সংক্রান্তির দিন ভাদুর বিসর্জন আর বিশ্বকর্মা পুজো - এগুলো একটু আধটু আমি জানতাম।  পুরুলিয়ায় চাকরির সময় আমি আর একটা উৎসব, আর একটা পরবের কথা জেনেছি, যেটার কথা ওখানে না থাকলে হয়ত জানাই হত না। উৎসবের নাম ছাতা পরব।   নমস্কার, আমি সৃজন।  আমার পডকাস্ট সৃজনের পডাবলীর স্পেশাল সেগমেন্ট অফবিট পুরুলিয়ায়  আজ আপনার সাথে গল্প করব ছাতা পরব নিয়ে। এমন একটা উৎসব যেটা কেবল বছরের একদিনই হয়, খুব কম জায়গায় হয়।  তার মধ্যে যেটা সব থেকে ফেমাস - চাকলতোর, তার কথাই বলব। স্থানীয় রাজার মাথায় যে ছাতাটি এখানে তোলা হয় সেটির উচ্চতা ২৫ থেকে ৩০ ফুট। রাজা বলতে রাজপরিবারের বংশধর।  শালের খুঁটির উপরে বেঁধে সাদা রঙের কাপড় দিয়ে তৈরি হয় ছাতা। আগে পালকিতে চড়ে রাজা রাজপ্রাসাদ থেকে মেলায় আসতেন ছাতা তুলতে। এখন আর পালকির ব্যবহার হয় না যুগের সাথে তাল মিলিয়ে রাজা আসেন মারুতি বা টাটা সুমোতে চেপে। আগে ছাতা হতো অনেক বড় মাপের। কাপড় লাগত ১৪ গজের মতো। এখন সাইজ অনেক কমেছে তাই কাপড় কম লাগে। ছাতা মেশিনে সেলাই করা হয়। আগে প্রত্যেক বছর নতুন শালের খুঁটি ব্যবহার করা হতো, তা আর এখন হয়ে ওঠে না। এমনিতে কাঠের দাম আকাশছোঁয়া তারপরে শালকাঠ তো আরও রেয়ার।  এখন তাই পুরনো কাঠকেই যত্ন করে রাখা হয় পরের বছরের জন্য। এই পরবের শুরু কোথায় সেটা জানতে গিয়ে ইন্টারনেটে বেশ কিছু ইনফরমেশন পাচ্ছি, যেগুলো একটা অন্যের সাথে যায় না। আনন্দবাজারের একটা রিপোর্টিংয়ে আমি পঞ্চকোট রাজবংশের বর্তমান উত্তরসূরি সোমেশ্বর লাল সিংহ দেও এর একটা বক্তব্য পাচ্ছি, আমার সেটা সব থেকে বেশি রিলায়েবল ও লজিক্যাল বলে মনে হয়েছে। আনন্দবাজারের লেখাটা থেকে একটু পড়ে শোনাই -   উৎসবের সূচনার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে পঞ্চকোট রাজবংশের নাম। ওই রাজবংশের অন্যতম উত্তরপুরুষ সোমেশ্বর লাল সিংহ দেও জানালেন, একদা পঞ্চকোট রাজবংশের এক রাজা যুদ্ধে গিয়েছিলেন। কিন্তু, বেশ কিছুদিন কেটে যাওয়ার পরেও রাজার কোনও খবর পাওয়া যাচ্ছিল না। রাজা যুদ্ধে জয়ী হয়েছেন, না পরাজিত, সে সম্পর্কে প্রজা বা পরিবারের সদস্যেরা ছিলেন অন্ধকারে। তখন দূত মারফত খবর আসত। যেখানে দূতের দেখা মিলছিল, সেখানে খোঁজ নিয়েও রাজার কোনও খবর পাওয়া যায়নি। সোমেশ্বরবাবুর কথায়, “এই অবস্থায় রাজবাড়ির সকলের সঙ্গে প্রজারাও পড়লেন চিন্তায়। তাহলে কি কোনও দুঃসংবাদ মিলতে চলেছে? দুশ্চিন্তা আর উদ্বেগে যখন রাতে ঘুম নেই সকলের, সে সময় হঠাৎই একদিন খবর এল, রাজা যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে ফিরে আসছেন।” জনশ্রুতি, এর পরেই ঠিক হল রাজা যে যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছেন, সেই খবর প্রজাদের জানাতে হবে। কিন্তু কী ভাবে প্রজাদের কাছে দ্রুত বিজয় সংবাদ পৌঁছে দেওয়া যাবে? তখন জয়ের প্রতীক হিসাবে ছাতা তুলে বিজয় বার্তা ঘোষণা করে দেওয়া হল। ভাদ্র সংক্রান্তির এই দিনটিতে সেই বিজয় বার্তা ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই থেকে আজও মানভূমে এই বিজয় দিবস ‘ছাতা পরব’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। সোমেশ্বরবাবু বলেন, “পঞ্চকোটের রাজারা খুবই প্রজাবৎসল ছিলেন। তাই যখন রাজার বিজয় উৎসবের খবর রাজ্যে পৌঁছল, তখন সকলে মিলে আনন্দে মেতে উঠেছিলেন। আর এই ছাতা সাদা রঙের। আমাদের কুলদেবতা শ্যামরঘুবর। তাঁর ছাতার রংও সাদা। সেই ছাতা তুলেই বিজয়ের খবর পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল।” এই ছিল আনন্দবাজারের লেখা।  আর একটা খুব ইম্পরট্যান্ট রেফারেন্স তরুণদেব ভট্টাচার্যর লেখা পুরুলিয়া - সেখানে ছাতা পরব নিয়ে কি বলা আছে পড়ে শোনাই -   বই থেকে এই টুকুই।  ইন্টারনেটে কয়েকটা জায়গায় ছাতা পরবের সাথে ইন্দ্রদেবতার পুজো রিলেট করা হয়েছে।  সেটা আমার খুব একটা বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়নি।  ইঁদ পরব বলে আর একটা উৎসব হয় এই সময়, আমার মনে হয়েছে সেটার সাথে নামের মিল থাকায় ইন্দ্রদেবতার কথা চলে এসেছে। ইঁদ পরব নিয়ে অন্য একদিন না হয় বলা যাবে।  এই চাকলতোর যেতে হলে ট্রেনে টামনা স্টেশনে নামতে হবে, পুরুলিয়া থেকে বরাভূম বা চক্রধরপুরের দিকে যে লাইন যাচ্ছে, সেই লাইনে পুরুলিয়ার পরের স্টেশন টামনা, বাসে গেলে পুরুলিয়া থেকে বড়বাজার, অযোধ্যা পাহাড় বা জামশেদপুর যে বাস যাচ্ছে, তাতে করে টামনা মোড় নেমে সেখান থেকে অন্য কোন বাস বা টোটো করে যেতে হবে।  ঘটনাচক্রে আমি গতবছর একটা কাজে ওই দিকে গেছিলাম, তাই আমার দেখার ও জানার সৌভাগ্য হয়েছিল - কি বিশাল আয়োজন হয় ওই মেলায়।  তবে আমার রাজাকে বা রাজার মাথায় ছাতা তোলা দেখা হয়নি। সেটা আমি যখন ওখান দিয়ে যাচ্ছি, তার অনেক আগেই হয়ে গেছে।  তবে মেলায় বিশাল বিশাল ধামসা মাদল বিক্রি হতে দেখেছি। ছোট ছোট খেলার, যেগুলো রিং ছুড়ে টার্গেটে লাগানো বা লটারি টাইপের ব্যাপার, সেরকম খেলা হতে দেখেছি। এগুলো প্রাইজ হাঁসের ডিম, বা এরকম খুব সিম্পল জিনিসপত্র। দেশি মদ বিক্রি হতে দেখেছি, বিভিন্ন ধরনের খাবার দাবারের স্টল দেখেছি।  --- Send in a voice message: https://podcasters.spotify.com/pod/show/srijaner-podaboli/message
Pujabarshiki Ananda mela o anyanya
06-08-2023
Pujabarshiki Ananda mela o anyanya
যদি ছোট বেলার আউট অফ সিলেবাস বই পড়ার কথা বলতে হয়, আমার সবার প্রথমে মনে পড়ে পূজাবার্ষিকী আনন্দমেলার কথা । স্পেসিফিকালি বলে সালটা 1990, সেবার বাবা প্রথম পূজাবার্ষিকী আনন্দমেলা কিনে দিয়েছিল। rather বলা ভালো, কিনে এনেছিল । পরের বছর থেকে ব্যাপারটা কিনে দিয়ে ছিল বলা যায়। কারণ পরের বছর থেকে, বাবা মার কাছে, আমার তরফ থেকে, একটা ডিম্যান্ড থাকতোই পূজা বার্ষিকী আনন্দমেলার। আর সেই সময় আনন্দমেলা বর্ষাকালে বেরোত না, বেরোলেও সেটা আমি হাতে পেতাম পুজোর ঠিক আগে আগে, হাফ ইয়ার্লি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর। বাবা আনন্দমেলা আনলেও সেটা তোলা থাকত আলমারির উপরের দিকে, যেখানে হাত পেতাম না। নমস্কার আমি সৃজন, আজ আমার পডকাস্ট সৃজনের পডাবলীর এই এপিসোডে ফ্রেন্ডশিপ ডে স্পেশাল নস্টালজিয়া সফর, পূজাবার্ষিকী আনন্দমেলা নিয়ে।   প্রথম কয়েক বছর মা আমাকে গল্প পড়ে শোনাতো, তারপর তো নিজে নিজে কতক্ষণে পড়ব , সেটার জন্য ছটফট করতাম। এখন অডিও বুক এবং অডিও ড্রামা ফরম্যাটে বই বেরোয় , কিন্ত শুয়ে শুয়ে মার গলায় গল্প শোনার আলাদা একটা মজা আছে, সে মজাটা অডিওবুকে কোথায় ? আর এই মজাটা বোধ হয় এখনকার রিলস, শর্টস এর জেনারেশন বুঝতেই পারল না। তখন আকাশবাণী আর দূরদর্শনের লিমিটেড কন্টেন্ট, ফলে বইয়ের খুব একটা কম্পিটিশন ছিল না। এখন বিভিন্ন ওটিটি বা ইউটিউব, স্পটিফাইয়ের মতন অন ডিমান্ড কন্টেন্টের দৌলতে বই পড়ার অভ্যাসটাই হারিয়ে যেতে বসেছে ।  তো, যেটা বলছিলাম, আমার প্রথম পূজাবার্ষিকী আনন্দমেলা 1990 তে। কভারে যে বাচ্চা ছেলের ছবিটা দেখা যাচ্ছে, ওটা আমি, ছবিটা প্রথম আনন্দমেলা পড়ার এক বছর আগে তোলা, 1989 এ ।  ছবিটা দেখে আমার সেই সময়ের বয়েস খানিকটা আন্দাজ করতে পারছেন আশা করি। সেই পূজাবার্ষিকীর লেখক হিসাবে যাদের কথা মনে পড়ছে - সত্যজিৎ রায়, বিমল কর, সুনীল গাঙ্গুলী, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদার, ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়, দুলেন্দ্র ভৌমিক , মতি নন্দী, শৈলেন ঘোষ এবং সম্ভবত দেবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়। সত্যজিৎ এর ওটাই শেষ শঙ্কু উপন্যাস ছিল - স্বর্ণপর্নী। আর সেই সময় আনন্দমেলার যে লোগোটা ব্যবহার হত, যেটা এই পডকাস্ট কভারেও দেওয়া আছে, সেটা কিন্তু সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্টি। যাইহোক এই একটা বইয়ের হাত ধরে, কিকিরা , কাকাবাবু , পাণ্ডব গোয়েন্দা, অর্জুন এদের সাথে আলাপ হল এবং সেই আলাপ চলল দীর্ঘদিন। তারপর সময়ের সাথে সাথে সুচিপত্র থেকে পুরোনো নাম কমেছে, নতুন নাম যুক্ত হয়েছে বা কলাবতী, দীপ কাকু, মিতিন মাসির মতন চরিত্রদের সাথে পরিচয় হয়েছে।  আমার পড়া প্রথম সেই আনন্দমেলায় শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের লেখা উপন্যাস ছিল চক্রপুরের চক্করে। সেই প্রথম আলাপ ওনার সাথে। আর এবার দেখলাম আনন্দমেলায় শেষ সুতোটা ছিড়ে গেল। এখনো হাতে পাইনি যদিও, কলকাতায় গিয়ে কিনব । নাইন্টিসের কথা যখন উঠেছে, কবীর সুমনকে একটু কোট করি - শীর্ষেন্দুর কোনো নতুন নভেলে, হঠাৎ পড়তে বসা আবোল তাবোলে । শীর্ষেন্দুর নতুন নভেল এবার আনন্দমেলায় নেই। তবে, ফেসবুকে দেখলাম দেশে নাকি ওনার অদ্ভুতুড়ে সিরিজ বেরোবে । দেশ, চিরকালই গুরুগম্ভীর ব্যাপার । কিনলেও অনেক সময়েই পড়ব কি পড়ব না ভাবতে ভাবতে সময় কেটেছে। আনন্দমেলা আর শেষ কয়েক বছর কিশোর ভারতী আমার কাছে খুব স্টেপল ফুড বলে মনে হয়েছে। কোন একটা উপন্যাস ধরলাম, একেবারে শেষ করে উঠলাম। দেশ একটু গভীর , জটিল প্লট অনেক সময়েই পড়তে পড়তে রেখে দিয়েছি, পড়ে হয়ত শেষ করেছি, কয়েক সময় সেটাও হয়নি। দেশে অদ্ভুতুড়ে সিরিজ বেশ খানিকটা মিসফিট বলেই মনে হল।  খবরটা যদি আদৌ সত্যি হয়। আর ফেসবুকে একটু আগে একটা পোস্টে দেখলাম কিশোর ভারতীতে ওনার লেখা আছে। দেখা যাক কোনটা কেমন হয় । আচ্ছা , গত বছর যতগুলো পুজো সংখ্যা কিনেছিলেন, পড়েছিলেন সব গুলো ? আমার তো কোনোটাই পুরো পড়া হয়নি।  দু একটা তো একেবারেই পড়া হয়নি ইমপালস বাইয়িং এর পর। এবার হয়ত কম কিনব, কিন্তু পড়ব সব । আপনি কি কি কিনবেন ? আচ্ছা বইয়ের কথা বলায় মনে পড়ল - সৃষ্টিসুখ থেকে প্রকাশিত ডিজিটাল সেফটি কিনেছেন তো ? না কিনলে এখনই কিনে ফেলুন। অনলাইনে কোন ফ্রড হওয়ার মতন কিছু হলে, সেটা ঘটে যাওয়ার আগেই হয়ত বুঝতে পারবেন। বিপদ এড়াতে পারবেন। আমাজনে আর সৃষ্টিসুখের সাইটে পাওয়া যাচ্ছে।  ডেস্ক্রিপশনে লিংকে দেওয়া থাকলো।  না কিনলে বিপদে আপনি পড়বেন, আমার কি !! আর হ্যাঁ, এই পডকাস্ট - ফলো সাবস্ক্রাইব না করা থাকলে, করে ফেলুন শিগ্গির। তাহলে পরের এপিসোড এলে মিস হয়ে যাবে না।  সবাইকে নিয়ে ভালো থাকবেন , সুস্থ থাকবেন।  আজ চলি, কথা হবে সামনের সপ্তায়।  টাটা।    Book Link - Amazon : https://amzn.eu/d/66JQMOR Sristisukh : https://sristisukh.com/ss_new/product/digital-safety/ Thank You --- Send in a voice message: https://podcasters.spotify.com/pod/show/srijaner-podaboli/message
Goopy Gyne Bagha Byne : Amar priyo cinema
29-07-2023
Goopy Gyne Bagha Byne : Amar priyo cinema
সিনেমা কেন দেখি এটার খুব একটা সহজ সরল উত্তর যে হয় এমন নয়।  আমি সিনেমা জগতের লোক নই। ফলে সিনেমাকে টেক্সটবুক হিসাবে পড়ার দায় আমার নেই। সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষ যে কারনে সিনেমা দেখে, আমি ও তাই - রোজকার দৈনন্দিন গতানুগতিক জীবনের থেকে একটা ব্রেকের জন্য,  একটু আরামের জন্য। তবে তার মধ্যেও কখনো কখনো কোন সিনেমা একটু ভাবায় বা এমন একটা গল্প বলে, সেটা দেখে বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে গল্পটা অনুভব করতে হয় । আর কিছু গল্প থাকে তাতে এত লেয়ার থাকে, যেটা এক একটা মানুষের কাছে এক একটা আলাদা বার্তা পৌঁছে দেয় । সেই গল্প হয়ত সেই সময়ের মানুষ একভাবে ইন্টারপ্রেট করেছেন, এই সময়ের মানুষ অন্যভাবে করছেন। কিন্তু সময়ের সীমানা পেরিয়ে সব সময়েই সেটা প্রাসঙ্গিক থাকে। নমস্কার আমি সৃজন। আজ এরকমই এক জনপ্রিয় টাইম টেস্টেড বাংলা সিনেমার কথা বলব। সিনেমাটা আমি ছোট বেলা থেকে কতবার যে দেখেছি তার হিসেব আর নেই । সিনেমার নাম গুপি গাইন বাঘা বাইন । আমার যতদূর মনে পড়ছে, প্রথম দেখেছিলাম কোন এক গরমের ছুটিতে , দুরদর্শনের কলকাতা কেন্দ্র তখন ছুটি ছুটি বলে একটা অনুষ্ঠান করত । সেই সময়, নির্ভেজাল আনন্দ পেয়েছিলাম । ইন ফ্যাক্ট আমি আগে সিনেমা দেখে পড়ে গল্পটা বইতে পড়েছিলাম , এবং অবাক হয়েছিলাম এটা দেখে, যে কয়েকটা নাম ছাড়া ঠাকুরদা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর লেখা গল্পের প্রায় সবই পাল্টে ফেলেছেন পরিচালক সত্যজিৎ রায়। তারপর কোন এক আনন্দমেলায় পড়েছিলাম সত্যজিৎ ভারত চীন বা ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের প্রসঙ্গ খুব সুক্ষ ভাবে ছবিতে রেখেছেন। আবার এই গল্পের সাথে এখনকার সময়ের রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের ও অদ্ভুত মিল কিন্তু একটু খেয়াল করলে দেখতে পাওয়া যায় । সব থেকে মজার কথা, এই সব জটিল ব্যাপার ইগনোর করলেও ছবিটা দেখার মজা কোথাও একটুও কমে না। ছবিতে দেখানো হয় গ্রামের সহজ সরল ছেলে গুপী , নিজেকে, ওস্তাদ গাইয়ে বলে মনে করে। কিন্তু গ্রামের বয়স্ক মানুষদের শয়তানীর শিকার হয়ে , জমিদারের আদেশে গাধার পিঠে চেপে গ্রামছাড়া হতে হয়। গুপী রাত আশ্রয় নেয় এক জঙ্গলে। সেখানে নানা ঘটনার মধ্যে দিয়ে আলাপ হয় বাঘার সাথে। তাকেও গ্রামের জমিদার বেসুরো বাজনা বাজানোর জন্য গ্রাম থেকে তাড়িয়েছে । সেই গভীর জঙ্গলে, গুপী আর বাঘা দেখা পায় ভুতের রাজার। সেই ভুতের রাজা ওদের বেসুরো গান শুনে খুশি হয়ে তিনটে বর দেয় - প্ৰথম বরে তারা যা চায় তাই খেতে পাবে। দু নম্বর বরে যেখানে খুশি যেতে পারবে । আর তিন নম্বর বরের প্রভাবে সবাই মন্ত্রমুগ্ধের মতন ওদের গান শুনতে থাকবে । ওরা রাস্তায় এক ওস্তাদের পালকি যেতে দেখে । সেখান থেকে জানতে পারে শুন্ডি রাজ্যের রাজা গানের প্রতিযোগিতা করছেন । অনেক মজার ঘটনার মধ্যে দিয়ে তারা পৌঁছায় শুন্ডি, তাদের গান শুনে রাজা মুগ্ধ হন, গুপী বাঘা কে রেখে দেন রাজ প্রাসাদে । এরপর একদিন খবর আসে হাল্লার রাজা আক্রমন করতে চলেছেন শুন্ডিকে । হাল্লার রাজা আর শুন্ডির রাজা আসলে দুই ভাই । এরপর নানান ঘটনার মধ্যে দিয়ে কিভাবে এই দুজন যুদ্ধ আটকালেন সেটা যারা সিনেমাতে দেখানো হয়েছে । বাংলা সিনেমার ইতিহাসে অন্যতম সেরা সিনেমা শুধু নয়, সবচেয়ে জনপ্রিয় সিনেমা হিসাবেও এই ছবির নাম একটা লম্বা সময় ধরে ছিল, যে রেকর্ড পরে আর একটা মিউজিক্যাল সিনেমা এসে ভেঙে দেয় । গেস করুন তো কোন সিনেমা ? গুপি গাইন বাঘা বাইনের জনপ্রিয়তার রেকর্ড যে সিনেমা পরে ভেঙেছিল, তার নাম বেদের মেয়ে জোসনা । উনিশশো ঊনসত্তরের আটই মে রিলিজ করেছিল দু ঘন্টার একটু বেশি সময়ের গুপি গাইন বাঘা বাইল। রিলিজের সাথে সাথেই বিপুল জনপ্রিয়তা । টানা একান্ন সপ্তাহ ধরে সিনেমা হলে চলেছিল সেই সময় । শুধু জনগণের ভালবাসাই নয়, সেরা ছবি ও সেরা পরিচালকের রাষ্ট্রপতি পুরস্কার ও জিতে নিয়েছিল সেই বছর ।  পুরোটা জানতে শুনতেই হবে এই এপিসোড --- Send in a voice message: https://podcasters.spotify.com/pod/show/srijaner-podaboli/message
Momo Chitte
20-07-2023
Momo Chitte
দিল্লীতে আমি যে জায়গাটায় থাকি সেখানে যে খাবারটা সব থেকে বেশি পাওয়া যায় সেটা বোধ হয় মোমো, তবে এই এপিসোডে মোমো নিয়ে আড্ডা শুধু দিল্লীর রাস্তায় থেমে থাকবে না। সত্যি বলতে দিল্লীর এই মোমোর সাথে মেয়োনিজ - এই ব্যাপারটা আমার খুব একটা পছন্দ হয় না।  আর খুব মিস করি কলকাতায় গরম যে স্যুপটা দেয় , যেটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে চিকেন স্টক দিয়ে বানানো হয়, সেটাকে। যে সময় আমি ভুবনেশ্বরে চাকরি করছি, মানে ওই দু হাজার আট কি নয়ের ঘটনা, সেই সময়ে ইনফোসিটির গেটের কাছে একটা গাড়িতে অল্প বয়েসী কয়েকটা ছেলে মোমো বিক্রি করত। ওরা ওই স্যুপে আদা , রসুন , পেঁয়াজের সাথে ছোট ছোট চিকেনের টুকরো আর ডিম দিত। শুধু সেটার লোভেই বেশ কয়েকদিন ওখানে মোমো খেয়েছিলাম বলে মনে পড়ে। মোমো নিয়ে এরকম স্পেশাল কোন স্মৃতি আছে নাকি আপনার ?  চলুন আমার এই পডকাস্ট সৃজনের পডাবলীর এই এপিসোডে, আপনি আর আমি সৃজন, মোমো নিয়ে জমিয়ে আড্ডা দেওয়া যাক।  কলকাতায় ডালহৌসীতে যখন চাকরি করি, তখন অফিসের পিছনেই ছিল চাউমিন, চিলি চিকেন, আর মোমোর একটা দোকান, ওদের মোমোটাও বেশ ভালো ছিল। দোকান যারা চালান, তারা গোর্খা। এনাদের পূর্বপুরুষ সব রাজভবনে চাকরি করতেন কোন এক সময়। ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক হেড অফিসের আশপাশের খাবারের গল্প শুরু করলে, একটা এপিসোড নয়, একটা সিজন হয়ে যাবে। সে রাস্তায় যাচ্ছি না। বরং আমরা যাই তিব্বত থেকে লাসা হয়ে কাটমান্ডুর রাস্তায়। যে রাস্তা ধরে তিব্বতি মোমো ভারতে এলো। নাইনটিন সিক্সটিজে, যখন চীন তিব্বত দখল করছে, তিব্বতিরা বিপুল সংখ্যায় আশ্রয় নিলেন - দার্জিলিং, সিকিম, ধর্মশালা, লাদাখ , দিল্লী এই সব জায়গায়। আর এনাদের সাথে আসা মোমো জায়গা করে নিলো ভারতবাসীর মনে, বলা ভালো, ভারতবাসীর পেটে।   এই মোমোর আবার একটা বড়লোক কাজিন আছে, যার নাম ডিমসাম। তবে আকারে একই রকম হলেও দুজনের অরিজিন কিন্তু আলাদা আলাদা জায়গায়। মোমো তিব্বতে আর ডিমসাম চিনে। আমরা যেমন চায়ের সাথে বিস্কিট ছাড়া কিছু ভাবতে পারি না , চাইনিজরা নাকি চায়ের সাথে ডিমসাম খান। যারা এটা নিয়ে একটু আধটু জানেন তারা বলেন, সব মোমোই ডিমসাম , কিন্তু সব ডিমসাম মোমো না। ডিমসাম জিনিসটা একটু বড় হোটেলে বা দামী রেষ্ট্যুরেন্টে পাওয়া যায়।  বানানোর প্রসেস একটু সফিস্টিকেটেড, বাইরের কভারটা একটু পাতলা, একটু বেশি যত্ন নিয়ে বানানো , পুরের ক্ষেত্রেও অনেক রকম ভ্যারিয়েশন দেখা যায়। আমার দু একটা অফিশিয়াল কনফারেন্সে গিয়ে চেখে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল , যদিও তখন অবাক হয়েছিলাম মোমোর এরকম অদ্ভুত নাম লেখা দেখে।  তবে ফাইভ স্টারে এরকম একটু অন্য রকম নাম থাকা বেশ নরম্যাল ব্যাপার, তাই ওটা যে মোমো না সেটা তখন বুঝিনি।  ফিরে আসি মোমোতে।  কলকাতায় গত বছর গন্ধরাজ মোমো বেশ ভাইরাল হয়েছিল, কলকাতার বাইরে চাকরি করার জন্য এখনো সেটা চেখে দেখার সৌভাগ্য হয়ে ওঠে নি। তবে দিল্লীতে খেলাম তন্দুরী মোমো, সেই একই দোকানে পাওয়া যাচ্ছে বাটার মালাই মোমো এবং আরো অনেক ভ্যারিয়েশন। কাঠকয়লায় ভালো করে পুড়িয়ে একটু বাটার ব্রাশ করে দেয় তন্দুরি মোমোতে ।  আর সাথে থাকে , পুদিনা চাটনি , কাঁচা পেঁয়াজ কুচি, ঝাল সস।  আমার কিন্তু  বেশ ভালোই লাগল। ট্রেডিশানাল স্টিমড মোমো আর ফ্রায়েড মোমোর পাশাপাশি এইসব লোকাল ইনোভেশন ও কিন্তু বেশ পপুলারিটি পাচ্ছে। তাই যে জিনিসটা, তিব্বতী ব্যবসায়ীরা, বেশ লম্বা সময় সাথে নিয়ে ঘুরতে পারবেন বলে তাদের বাড়ির লোক ঘরোয়া খাবার হিসাবে বানাতো, সেটাই আজ নানান জায়গায় নানান ফ্লেভার পাচ্ছে।  এই এপিসোড শুনে মন টা কি একটু নেচে উঠল ? মোমো খেতে ইচ্ছে করছে কি ? তাহলে অপেক্ষা কেন ? হাতে সময় না থাকলে অনলাইনে অর্ডার করে ফেলুন আর সময় থাকলে দোকানে গিয়ে খেয়ে আসুন। আমাকে জানাবেন কেমন লাগল আজকের মোমো। আর জানাবেন কেমন লাগল আজকের এই এপিসোড।  আর যদি সৃজনের পডাবলী ফলো না করা থাকে, তাহলে সেটা করতে ভুলবেন না, ফলো করা থাকলে নতুন এপিসোড এলে মিস হয়ে যাবে না।  এই এপিসোড ভালো লাগলে এই পডকাস্ট আপনার বন্ধুবান্ধবদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু। ফিরব নতুন এপিসোড নিয়ে, সামনের সপ্তায়। ভালো থাকবেন , আজ চলি।  টাটা।  --- Send in a voice message: https://podcasters.spotify.com/pod/show/srijaner-podaboli/message